সড়কজুড়ে দোকানপাট, বিপর্যস্ত জনজীবন

প্রকাশিত: ৪:১৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৯, ২০২৫

সড়কজুড়ে দোকানপাট, বিপর্যস্ত জনজীবন

মাধবপুর সংবাদদাতা ::
মাধবপুর পৌরবাজার ও এর সংলগ্ন সড়কে প্রশাসনের অভিযানে সাময়িক স্বস্তি মিললেও কয়েকদিন পর আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসে সবকিছু। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভোগাচ্ছে তীব্র যানজট। বাজারের এই স্থায়ী যানজট এখন যেন এক অনন্ত দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে।

সরেজমিনে বাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঢাকা-সিলেট হাইওয়ে-সংলগ্ন ফুলপট্টি রোড থেকে বিউটি হোটেল, সোনালী ব্যাংক হয়ে কাঁচাবাজার পর্যন্ত যানজট লেগেই থাকে। ফুটপাত ও রাস্তার পাশে দখল করে বসেছে অসংখ্য অস্থায়ী দোকান ও হকার।

বাজারসংলগ্ন রাস্তার মাঝখানে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকে অটোরিকশা, টমটম ও ভ্যানগাড়ি। এতে যান চলাচল প্রায় অচল হয়ে পড়ে। বাজারে কেনাকাটায় আসা ক্রেতা, স্কুলগামী শিক্ষার্থী, কর্মজীবী মানুষ ও রোগীরা যানজটের কারণে প্রচণ্ড দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি অবৈধ দোকানদারদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করছে; যার বিনিময়ে এভাবে রাস্তা দখল করে বসতে দেওয়া হয়েছে তাদের। প্রভাবশালীদের সহায়তা থাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েও কাজ হচ্ছে না। প্রশাসনের প্রচেষ্টা দীর্ঘস্থায়ী না হওয়ায় ক্রমেই পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে।

সাবেক কাউন্সিলর শেখ জহিরুল ইসলাম বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে বাজার গড়ে ওঠায় বর্তমানে যানবাহনের চাপ বহুগুণ বেড়েছে। মহাসড়কের নির্মাণকাজ চলায় ছোট যানবাহনগুলো বাজারের ভেতরে ঢুকে জটলা সৃষ্টি করছে। এতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে।

সাবেক মেয়র হাবিবুর রহমান বলেন, তিনি মেয়র থাকাকালে পৌরসভার নিজস্ব জনবল দিয়ে বাজারের শৃঙ্খলা বজায় রাখার চেষ্টা করেছেন। তখন কিছুটা নিয়ন্ত্রণ ছিল। এখন কেউ নিয়ম মানছে না। বাজারের ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে অস্থায়ী দোকান গড়ে উঠেছে, এতে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই ভোগান্তিতে পড়ছেন। প্রশাসন, পৌর নাগরিক ও ব্যবসায়ী সবাইকে একসঙ্গে উদ্যোগ নিতে হবে। কেবল উচ্ছেদ নয়, বিকল্প স্থান নির্ধারণ ও নিয়মিত তদারকি জরুরি। বাজারের স্থায়ী ব্যবস্থাপনা ছাড়া যানজটমুক্ত করা সম্ভব নয়।

ব্যবসায়ী আনিছুর রহমান বলেন, নিয়মিত মোবাইল কোর্ট ও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকলে এই বাজারে শৃঙ্খলা ফিরবে। শুধু আইন প্রয়োগ নয়, নাগরিক সচেতনতা ও সহযোগিতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পৌর প্রশাসক জাহিদ বিন কাসেম বলেন, দিনের বেলায় যাতে কোনো যানবাহন বাজারে প্রবেশ করতে না পারে সে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফুটপাত দখলকারীদের তালিকা তৈরি হচ্ছে। প্রয়োজনে জরিমানা ও উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। সবাই চায় বাজারটিকে স্থায়ীভাবে সুশৃঙ্খল করতে।